রুহুল আমিন রুকু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার তীরে অস্থায়ী কাচা বাদামের হাট বসেছে। বাদামের এ হাট নির্দিষ্ট কোনো স্থানে স্থায়ীভাবে বসানো হয় না। প্রতিবছর হাটের স্থান পরিবর্তন হয়ে থাকে। মূলত নৌঘাটের ওপর নির্ভর করে বাদামের হাটটি বসানো হয়েছে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে পানিয়ালের ঘাটের উপর পাকার মাথায় বসানো হয়েছে এ হাট। গত বছর বাদামের হাট বসানো হয়েছিল থেতরাই বাজার গোলচত্তর নামক স্থানে। তবে বাজারে বাদামের চাহিদা কম থাকায় বাদামের দাম চাহিদার তুলনায় অনেক কম থাকায় চিন্তিত বিক্রেতারা।
এদিকে নৌঘাটের পাশে বাদামের হাট বসানোয় যাতায়াত পরিবহন ভাড়া কমায় তারা লাভবান হচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে বাদাম কিনে থাকেন। বালুচর ডিঙিয়ে বাদাম বহন করে মূল বাজারের মধ্যে বিক্রি করতে চাষিদের অনেক বেগ পেতে হতো। তাই তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বাদামের হাট বসায় অনেক খুশি।
সরেজমিন বুধবার (২৫ জুন) উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তার তীরবর্তী পাকার মাথায় গিয়ে দেখা যায়, কাচা বাদামের জমজমাট হাট বসেছে। বস্তা ভর্তি বাদাম নিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। তবে ক্রেতা উপস্থিতি অনেক কম দেখা যায়। যে কারণেই বাদাম বিক্রি করতে বেগ পোহাতে হচ্ছে বাদাম বিক্রেতাদের। তারা বলেন ইউনিয়নের বাহির থেকে ক্রেতা আসলে বাদামের চাহিদা অনেক বেড়ে যায় দামও অনেক ভালো পাওয়া যায়। এছাড়া এবারে তিস্তার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাদামের ক্ষেত তলিয়ে যায়। ফলে অনেক বাদামের রঙ পরিবর্তন হয়। ফলে বাদামের দাম অনেক কমে যায়। দ্বীগুন লাভের আশা থাকলেও এবার তেমন বেশি লাভ পাওয়া যাবেনা বলে জানান।
বিক্রেতা কৃষক আমিনুল ইসলাম (৩৫) বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে ফলন কম হয়েছে। তারপরেও তিন একর জমিতে ১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ৭৫ মণ বাদাম পেয়েছি। বাদাম বিক্রি করেছি মণ প্রতি ৩ হাজার ৩ শত টাকা। এই দরে বেচলেও মোট আয় হবে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, বাদাম চাষের জমিতে অন্য ফসলের ফলনও আশানুরূপ পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।
পাইকেরিতে ক্রয় করা রেজাউল ইসলাম বলেন, তিস্তার তীরবর্তী পাকার মাথায় কাচা বাদামের অস্থায়ী হাটে বাদাম ক্রয় বিক্রয় চলছে। এবারে বাদামের বাজারদর একটু কম। বেচাকেনা অনেক কম হচ্ছে। দাম কম হওয়ার বিষয় তিনি বলেন, এবারে বাদামের রঙ বেশি ভালো না থাকায় দাম চাহিদার তুলনায় অনেক কম। এখন বাজার কম থাকলেও পর্বর্তীতে দাম বৃদ্ধি পাবে জানান।
ইউনিয়নের বাহির থেকে কাচা বাদাম ক্রয় করতে আসা মহুবর রহমান বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে বাজার একটু কম। এখন মৌসুম থাকায় কাচা বাদামের চাহিদাও অনেক কম। তবে আরও কিছুদিন পরে বাদামের চাহিদা ও দাম বৃদ্ধি পাবে।
হাটি ইজারাদার নুরে আলম সিদ্দিক বলেন, তিস্তার তীরবর্তী পাকার মাথায় অস্থায়ী কাচা বাদামের হাট বসানো হয়েছে। কেতা বিক্রেতার সুবিধার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বাদাম অনেক বেচা কেনা হচ্ছে বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, বাদাম চাষ করে চরের কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাদাম ঘরে তোলার পর কৃষকরা জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেন। কৃষি বিভাগ থেকে চরের চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
Leave a Reply