উখিয়ার কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা তরুণী রোজিনা অবাক করা কৌশলে হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের নাগরিক “নুসরাত জাহান সাথী”! শুধু নাম পরিবর্তন নয়, নতুন পরিচয়ে তিনি বান্দরবানের স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হয়েছেন এবং সেখানকার পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করেছেন বৈধ পাসপোর্টও।
রোজিনার (বর্তমানে পরিচিত নুসরাত জাহান সাথী নামে) জন্ম তারিখ ১০ মে ১৯৯৯। পিতার নাম মোহাম্মদ কবির হোসেন এবং মাতার নাম রেহেনা বেগম। তিনি কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের ব্লক-সি, শেড নং-৯, এমআরসি নং-৪৩২১৪-এ বসবাস করছেন। অথচ তার ভোটার তালিকায় ঠিকানা দেখানো হয়েছে বান্দরবানের লাংগীপাড়া, ৩১৩ নং বান্দরবান মৌজা, ডাকঘর-বান্দরবান-৪৬০০, বান্দরবান পৌরসভা।
এই ভুয়া পরিচয়ে নুসরাত জাহান সাথী নামে তিনি পেয়েছেন জাতীয় পরিচয়পত্র (নং: ৭৮১৮৫৩০৭৯৭) এবং পাসপোর্ট (নং: E06092675)। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন ও সচেতন মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা ওরফে নুসরাত জাহান সাথী দীর্ঘদিন ধরে পরিচয় গোপন করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন প্রবাসী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে। একাধিকবার মালয়েশিয়ায় গিয়ে এক রোহিঙ্গা যুবক, মালয়েশিয়া প্রবাসী নবী হোসেনের সঙ্গে ‘স্ত্রী’ পরিচয়ে ৮ বছরের বেশি সময় ছিলেন। নবী হোসেনের কাছ থেকে কৌশলে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং তাকে তালাক দেন। অভিযোগ রয়েছে, এভাবে একাধিক পুরুষকে প্রতারণার মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন তিনি।
নুসরাত জাহান সাথী বর্তমানে আবারও কুতুপালং ক্যাম্পেই বাবা-মায়ের সঙ্গে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে রাজাপালং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন বলেন, “রোহিঙ্গারা কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও দালালের সহায়তায় বাংলাদেশি পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট সংগ্রহ করছে। এই ভয়ঙ্কর চক্র বন্ধে তদন্তপূর্বক এসব ভুয়া ভোটারদের বাতিলের দাবি জানাই।”
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এটি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—বরং একটি সুপরিকল্পিত চক্রের কাজ, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অবিলম্বে এসব জালিয়াতি তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনার দাবি উঠেছে সর্বত্র।
Leave a Reply