June 22, 2025, 1:47 am

রোহিঙ্গা সংকটে হোস্ট কমিউনিটির ভূমিকা ও উন্নয়নে এগারো দফা দাবি: উখিয়ায় UCNA ও রাজনৈতিক নেতাদের সংলাপ অনুষ্ঠিত।

Reporter Name
  • Update Time : Wednesday, June 11, 2025
  • 26 Time View

কামরুন তানিয়া,নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া (কক্সবাজার)১১ জুন:


বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মানবিক সংকট হিসেবে পরিচিত রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যায় হোস্ট কমিউনিটির ভূমিকা ও তাদের উন্নয়নের দাবিতে এক গুরুত্বপূর্ণ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়ায়। মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকাল ৩টায় কোটবাজার এন.আলম মার্কেটের নিচতলায় অবস্থিত পালং রিসার্চ একাডেমী মিলনায়তনে সংলাপের আয়োজন করেন উখিয়া সিবিও এনজিও এ্যালায়েন্স (UCNA)।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন UCNA সভাপতি ও হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম। এতে অংশগ্রহণ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সভাপতি হাফেজ কলিম উল্লাহ, সেক্রেটারি মাওলানা এম জাহাঙ্গীর রফিক, সহ-সভাপতি মাওলানা আবদু গনি, জয়েন সেক্রেটারি হাফেজ ইকবাল হোসেন প্রচার সম্পাদক হাফেজ অলিউল্লাহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মৌলনা রায়হান শফিক, মৌলানা বশির আহমেদ, মৌলানা খাইরুল আমিন, মৌলানা হাফেজ মাহমুদুল হক হাফেজ ফরিদুল আলম হাফেজ ইমরান আল মাহমুদ প্রমুখ। UCNA এর পক্ষ থেকে মুমিন চৌধুরী, সাংবাদিক রাসেল তালুকদার, কামরুন নেছা তানিয়া, জিয়া,ছুমাইর প্রমূখ।
সংলাপে রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে হোস্ট কমিউনিটির অবদান ও তাদের উপর বিরাজমান চাপ তুলে ধরা হয়। আলোচনায় বলা হয়, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা দমন-পীড়নের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয় কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে, যার কারণে হোস্ট কমিউনিটির জীবিকা, পরিবেশ ও সামাজিক কাঠামোর উপর প্রচণ্ড চাপ পড়েছে।
সংলাপে UCNA পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত ১১ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়:
১. রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বরাদ্দকৃত সহায়তার ৩০% হোস্ট কমিউনিটির জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। ২. হোস্ট কমিউনিটির প্রকল্পগুলো স্থানীয় এজেন্সির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। ৩. হোস্ট কমিউনিটিকে জিআরপি (GRP) প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং উখিয়া-টেকনাফ ছাড়া অন্য কোথাও ৩০% বরাদ্দ থেকে প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না। ৪. কোনো দেশি-বিদেশি সংস্থা ক্যাম্পে সরাসরি কাজ করতে পারবে না এবং হুন্ডির মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ করতে হবে। ৫. মানব পাচার প্রতিরোধ, সহিংসতা প্রতিরোধ ও জিবিভি ইত্যাদি অধিকার ভিত্তিক প্রকল্প স্থানীয় এনজিও ও সিবিওদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। ৬. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ক্যাম্প পরিদর্শনে হোস্ট কমিউনিটির প্রতিনিধি ও UCNA প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ৭. উখিয়া-টেকনাফে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৮. যানজট নিরসনে বাইপাস সড়ক নির্মাণসহ একটি দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। ৯. হোস্ট কমিউনিটির জন্য চলমান মানবিক প্রকল্পগুলো কোনো অজুহাতে বন্ধ করা যাবে না। ১০. UCNA-এর সাথে RRRC, জেলা প্রশাসন ও UN সংস্থাগুলোর নিয়মিত মতবিনিময় সভার আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে। ১১. হোস্ট ও রোহিঙ্গা কমিউনিটির মধ্যে সম্প্রীতি রক্ষায় “সম্প্রীতি পরিষদ”-এর কার্যক্রমে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, “হোস্ট কমিউনিটির মানুষ শুরু থেকেই মানবিক ভূমিকা পালন করেছে, অথচ দীর্ঘদিন ধরে তাদের উন্নয়ন ও নিরাপত্তা উপেক্ষিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত এই কমিউনিটির প্রতি যথাযথ সহানুভূতি ও সহায়তা নিশ্চিত করা।”
সংলাপ শেষে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ UCNA-এর ১১ দফা দাবিকে যৌক্তিক উল্লেখ করে এগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Categories