মো: রাজিবুল ইসলাম বাবু,,নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় টানা তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও হালকা বাতাসে ক্ষেতজুড়ে নুয়ে পড়েছে রোপা আমন ধান। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ঘরে তোলার আগমুহূর্তে কৃষকরা পড়েছেন দিশেহারা অবস্থায়।
স্থানীয় কৃষকদের দাবি, এবারের বৃষ্টি তাদের পুরো মৌসুমের পরিশ্রমে ‘বড় ধাক্কা’ দিয়েছে। এখন তারা সরকারের সহযোগিতা ও ক্ষতিপূরণের আশায় অপেক্ষা করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, আধা পাকা ও পাকা ধানের শীষ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। জমিতে পানি জমে শীষ ভিজে থাকায় ধান পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে ফলন ও গুণগত মান দুই-ই কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত উপজেলায় প্রায় ৩ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান নুয়ে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ৬ হাজার ৩৭৩ হেক্টর জমিতে রোপা ও আমনের আবাদ করা হয়েছে।
রবিবার (২ নভেম্বর) উপজেলার জামনগর, দয়ারামপুর, পাঁকা ও গালিমপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটার উপযোগী ফসল পানি ও হালকা বাতাসের ধানগুলো মাটিতে শুয়ে আছে। কৃষকের মুখে হতাশার ছাপ।
জামনগর ইউনিয়নের নতুন পশ্চিমপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক জানান, “তিন বিঘা জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছি। ১৫ দিন পর কাটার কথা ছিল। এখন বৃষ্টিতে শিষ ভিজে যাচ্ছে, ফলন অর্ধেক হয়ে যেতে পারে। অনেক কষ্ট করে ফসল ফলালাম, সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষি অফিস থেকেও এখন পর্যন্ত কেউ এসে কোনো পরামর্শ দেয়নি।”
এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. ভবসিন্ধু রায় বলেন, “ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি—যেসব ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে সেগুলো গোছা করে বেঁধে দিতে। এতে কিছুটা হলেও ক্ষতি কমবে।”
তিনি আরও জানান, “ঘরে ঘরে গিয়ে পরামর্শ দেওয়া সম্ভব নয়, তবে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পাশে আছেন। আবহাওয়া অনুকূলে এলে দ্রুত ফসল ঘরে তোলার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।”