স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজারঃ কক্সবাজার জেলার মানবিক সংগঠন ভয়েস অব কক্সবাজার ভলান্টিয়ার্স-এর উপদেষ্টা পরিষদ, কার্যনির্বাহী পরিষদ ও সাধারণ সদস্যদের পরিচিতি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার ১১ অক্টোবর ২০২৫ ইং বিকাল ০৩ টায় কক্সবাজার পৌরসভা মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোঃ নাসির উদ্দীন, সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার, কক্সবাজার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট রমিজ আহাম্মেদ, আইনজীবী, জেলা জজ কোর্ট কক্সবাজার; শরমিন ছিদ্দিকা লিমা, বিভাগীয় প্রধান (বাংলা) ও অধ্যাপক, কক্সবাজার সিটি কলেজ; তৌহিদ বেলাল, সভাপতি, জেলা প্রেস ক্লাব কক্সবাজার; মোঃ সরওয়ার, চেয়ারম্যান, কোহেলিয়া টিভি ও সদস্য, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক, কোস্ট ফাউন্ডেশন।
সভায় বক্তারা সংগঠনের মানবিক কার্যক্রম আরও গতিশীল ও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান এবং তরুণদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কার্যনির্বাহী পরিষদে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ কামরুল হাসান। সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ রিয়াজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান হোসেন নবী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মনির, অর্থ সম্পাদক জাকির হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ ইসমাইল এবং তথ্য ও প্রচার সম্পাদক জাফর আলম।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সদস্য শাহরিয়ার, বশিরুল আলম, রফিকুল ইসলাম, নুরুল কাদের, জামিল, রেজাউল করিম রিয়াজ, সালাউদ্দিন কাদের, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, শিফন, আবু মোঃ শাহ আলম, বশির আহমেদসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
বক্তারা বলেন,কক্সবাজারের কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা: দুর্ভোগ কমাতে সরকারি উদ্যোগ জরুরি কক্সবাজার, বাংলাদেশের অন্যতম জনবহুল এবং পর্যটন জেলা হওয়া সত্ত্বেও, এখানে সরকারি পর্যায়ে কিডনি ডায়ালাইসিসের অপ্রতুলতা বা অনুপস্থিতি এখানকার সাধারণ মানুষ ও কিডনি রোগীদের জন্য এক মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি ডায়ালাইসিস সেন্টারের অভাব: জানা গেছে, জেলা সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে এখনো পর্যন্ত কোনো পূর্ণাঙ্গ সরকারি কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার নেই। ব্যয়বহুল বেসরকারি সেবা: বর্তমানে কিছু বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা চালু থাকলেও, তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রতি সেশনে প্রায় ৪,০০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা খরচ হয়, যা একজন দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত রোগীর জন্য নিয়মিত বহন করা অসম্ভব। একজন রোগীকে সপ্তাহে সাধারণত দুইবার ডায়ালাইসিস করাতে হয়, যার মাসিক খরচ প্রায় ৩৬,০০০ টাকা। এর সাথে ঔষধের খরচ যুক্ত হলে তা ৪০-৫০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। দুর্ভোগ ও খরচ: সরকারি কেন্দ্রে যেখানে খরচ ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যে হতে পারত, সেখানে বেশি খরচের কারণে অনেক রোগীই চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ডায়ালাইসিস করাতে রোগীদের চট্টগ্রাম বা ঢাকায় ছুটতে হয়, যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি করে। মৃত্যুঝুঁকি: বিপুল সংখ্যক রোগী পর্যাপ্ত ও সাশ্রয়ী চিকিৎসার অভাবে বিনা চিকিৎসায় অথবা দেরিতে চিকিৎসার কারণে মৃত্যু বরণ করছেন। সব দলেরদাবি ও প্রত্যাশা:
এ অবস্থায়, কক্সবাজারের জনগণ ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে: দ্রুত সরকারি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন: কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে অনতিবিলম্বে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার এবং নেফ্রোলজি ইউনিট স্থাপন করতে হবে।
স্বল্পমূল্যে সেবা নিশ্চিতকরণ: সরকারি উদ্যোগে রোগীদের জন্য স্বল্পমূল্যে বা বিনামূল্যে ডায়ালাইসিস সেবা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কোনো রোগীই চিকিৎসার অভাবে মারা না যায়। কিডনি রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যা বাড়িয়ে সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন করতে হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের দ্রুত ও মানবিক পদক্ষেপ এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জন্য জীবনরক্ষাকারী বার্তা বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।