উশৈনু মারমা,
থানচি,বান্দরবান।
বান্দরবানের থানচি উপজেলা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারনা উদসব ( আশ্বীনি পুর্নিমা) ও শারদীয় দুর্গা পূজা উদযাপনের আগত ভক্তদের আহার্য জন্য সরকারি বরাদ্ধের চাউলের উক্তোলনের ডেলিভারী আদেশ (ডিও) বিতরনে সময় সংশ্লিষ্ঠরা নয় ছয় করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর পিআইও কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়,২০২৫ সালে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আসন্ন প্রবারনা ( আশ্বীনি পূর্নিমা) ও শারদীয় দুর্গা পূজা উৎযাপন উপলক্ষে বৌদ্ধ বিহার ও বৌদ্ধ ভিক্ষু, শ্রমন রয়েছে এমন বৌদ্ধ বিহারের আগত ভক্তদের আহার্য জন্য থানচি উপজেলা ১১০ টি বৌদ্ধ বিহার অনুকুলে ৫০০ কেজি করে ৫৫.০০ মে:টন চাউল বরাদ্ধ দিয়েছে। একই সাথে ২ টি শারদীয় দুর্গা মন্ডপের ৫০০ কেজি করে মোট ১.০০ মে: টন চাউল বরাদ্ধ দিয়েছে।
বরাদ্ধকৃত চাউল বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি সভাপতি নামে গত সোমবার ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয় হতে উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে সরাসরি চাউল উক্তোলন করে স্বস্ব বৌদ্ধ বিহারে ৬ অক্টোবর প্রবারনা ( আশ্বীনি পূর্নিমা) দিনে আগত ভক্তদের আহার্য সময় রান্না করে আপ্যায়ন করার সরকারিভাবে নির্দেশনা ছিল।
থানচি উপজেলা ভিক্ষু সংঘে সভাপতি মগক হেডম্যান পাড়া বৌদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ উ. ইউসারাদা মহাথেরো বলেন, উপজেলা ৪ টি ইউনিয়নের ভিক্ষু প্যাগোডা /বৌদ্ধ বিহার রয়েছে মোট ৩৬ টি । তার মধ্যে, ৪নং বলিপাড়া ইউনিয়নের ১১ টি, থানচি সদরে ১০ টি, তিন্দুতে ৫ টি, রেমাক্রী ১০টি, এছাড়া আর কোন বৌদ্ধ বিহার নেই।থানছি উপজেলায় ভিক্ষু সংঘে
সাধারণ সম্পাদক করুনা শিশু সদনের পরিচালক উ. গাইন্দামালা মহাথেরো বলেন, আমাদের বিহারে অনাথ শিশু রয়েছে চাউল পেলে তাদের খাওয়ানো হতো কিন্তু আমাকে আমার একজন দায়ক ১৪ হাজার ৫শত টাকা দিয়েছে প্রবারনা ( আশ্বীনি পুর্নিমা) দিনের আগত ভক্তদের ভোজনের ব্যবস্থা করতে। আমি জিজেস করলাম কে দিয়েছে আমাদের চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা।
জিনিঅং পাড়া বৌদ্ধ বিহারে বিহার অধ্যক্ষ উ. ইউজবাসা থেরো বলেন, আমি এখন ও টাকা বা চাউল কিছু পাইনি।
অংপুং পাড়া (ক্রামা ধর্ম) মেনলে ম্রো বলেন আমাকে চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো ৬ হাজার ৫শত টাকা দিয়েছে প্রবারনা উদসব উদযাপনের ফানুষ উড়ানো জন্য। নিয়াবুট পাড়া ( ক্রামা ধর্ম) গংপ্রি ম্রো বলেন আমাদের পাড়া প্রবারনা ফানুষ উগানো জন্য চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো ১০ হাজার টাকা দিয়েছে।
বাথোয়াইচিং হেডম্যান জানান, ইউএনও স্যার ডিও লেটার দিয়েছে কিন্তু ফের পিআইও কার্যালয়ের শরীফুল ও রুবেলরা
নিয়ে গিয়ে বলেন চেয়ারম্যান সাথে যোগাযোগ করেন টাকা পাবেন পরে চেয়ারম্যান ১৪ হাজার ৫শত টাকা দিয়েছে।
পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য খামলাই বলেন, ১১০ টি মধ্যে ৩৬ টি বৌদ্ধ বিহার রয়েছে বাকি গুলি ম্রো সম্প্রদায়ের (ক্রামা ধর্ম) তাদেরকেও দিয়েছি। উপজেলা গ্রামে সংখ্যা বেশী থাকায় তাদেরকে ও ভাগ করে দেয়া কম পড়ে গেচ্ছে।
থানচি সদরের শারদীয় দুর্গা মন্ডপের উদযাপন কমিটি সভাপতি সুমন দত্ত বলেন ( ডিও লেটার) জন্য পিআইও অফিসের ১ হাজার টাকা এবং খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা আলীকদম উপজেলা থাকায় স্বাক্ষর নিতে ৫শত টাকা দিতে হয়েছে। আমরা ৫০০ কেজি চাউল বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা পেযেছি।
গত ৯ সেপ্টেম্বর জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা ( অ:দা:) মেহেদী হাসান ফারুক এর স্বাক্ষরীত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।তিনি এও উল্লেখ করেন বৌদ্ধ মন্দিরের সংখ্যা, আকার, ব্যাপকতা, আর্থিক সামর্থ্য/ স্বচ্ছলতা /দারিদ্রতা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নিয়মাবলী বিবেচনা করে চাউল উপ-বরাদ্দ করবেন। বৌদ্ধ মন্দিরের সংখ্যা কম হলে অতিরিক্ত চাল মজুদ রেখে অত্রাফিসকে অবহিত করতে হবে এবং নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় হিসাব সংরক্ষণ করার কঠোর নির্দেশ ছিল।
যোগাযোগ করা হলে সদর চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অংপ্রু ম্রো বলেন, আমার ইউনিয়নের গ্রাম রয়েছে অনেক কিন্তু বরাদ্ধ পেয়েছে অল্প, তাই সবাইকে ভাগ করে দিয়েছে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে মুঠো ফোনে কল পরেও কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়ার সম্ভব হয়নি। এবং১নং রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মুইশৈথুই মারমাকে ও মুঠোফোন বন্দ থাকায় তার বক্তব্য নেয়ার সম্ভব হয় নি।
উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ( পিআইও) মসফিকুর রহমান জানান, উপজেলা ৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে রেমাক্রীতে ৫৩ টি,তিন্দুতে ১১টি, থানচি ৩৬টি,বলিপাড়া ১০টি বৌদ্ধ বিহারের অনুকুলে বরাদ্ধ পেয়ে নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় হিসাব সংরক্ষণ করার কঠোর নির্দেশ মেনে স্থানীয় খাদ্য গুদাম থেকে উক্তোলনের জন্য সকল সভাপতিকে ডিও ডেলিভারী আদেশ পত্র হাতে হাতে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। যদি কোন বৌদ্ধ মন্দির এবং শারদীয় দূর্গা পুজায় না পাই তাহলে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।