পানি পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। মানুষের জীবনধারণ, কৃষি, শিল্প, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের প্রতিটি ক্ষেত্রে পানির ভূমিকা অপরিসীম। নিরাপদ পানির প্রাপ্যতা মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত হলেও বিশ্বের অনেক অঞ্চলে এখনও তীব্র পানি সংকট বিরাজ করছে। একইসঙ্গে বন, মাটি, নদী, খনিজ ও জীববৈচিত্র্যের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ টেকসই ব্যবস্থাপনার অভাবে হুমকির মুখে পড়ছে। তাই পানি অধিকার ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘ ২০১০ সালে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনকে মানুষের মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। প্রতিটি মানুষের বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও পর্যাপ্ত পানি ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিত করা এবং গৃহস্থালি, কৃষি, শিল্প ও পরিবেশের জন্য সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা জরুরি। একই সঙ্গে শিল্প বর্জ্য, কীটনাশক ও প্লাস্টিক দূষণ রোধ করে পানির উৎস রক্ষা এবং পানি নিয়ে দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বিরোধের ন্যায্য সমাধানও প্রয়োজন।
প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা অর্থ প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার, সংরক্ষণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখার কৌশল। টেকসই ব্যবহার, স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ, আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এর গুরুত্বপূর্ণ দিক।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পানি অধিকার ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ছাড়া কৃষি উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা, শিল্পায়ন ও পরিবেশ সুরক্ষা সম্ভব নয়। পানি অধিকার নিশ্চিত না হলে সামাজিক বৈষম্য, সংঘাত ও দারিদ্র্যও বাড়তে পারে।
এ বিষয়ে হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম বলেন, “টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি অধিকার নিশ্চিত করা ও প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য। স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে, দূষণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে পানিবণ্টন সমস্যার স্থায়ী সমাধানও সময়ের দাবি।”
তিনি আরও বলেন, “পানি ও প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা শুধু পরিবেশ রক্ষাই নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবকল্যাণের জন্যও অপরিহার্য।”