নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আর্থিক লাভ ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে নিজের পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ করেছেন দরপত্রে অংশ নেওয়া উইমেন ইনভাইরনমেন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (উইডু) প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আওয়াল হিমেল। তিনি বেশ কয়েকটি অভিযোগ উত্থাপন করে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ এর ধারা অনুসরণ করে ক্রয়কারী (PE) প্রতিষ্ঠান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনডিআর বাজেটের অধীন ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দুজন গাড়ির ড্রাইভার, একজন করে স্পিড বোট ড্রাইভার, পাম্প অপারেটর, সহকারী বাবুর্চি ও বেয়ারার এবং তিনজন চৌকিদার, চারজন ক্লিনার, সাতজন গেট অপারেটর ও তিনজন খালাসি মোট ২৩ জন আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে জনবল নিয়োগ প্রদানে পাউবো নেত্রকোণা কার্যালয় দরপত্র আহ্বান করেন। ইজিপিতে গত ৩ জুলাই দুপুর সাড়ে ১২টায় দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারিত ছিল। এরই প্রেক্ষিতে ১১২৪৭৭০ নম্বর টেন্ডার আইডির কাজ পেতে সাতটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করেন।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সাত প্রতিষ্ঠান হলো- ওয়ার্ল্ড সিকিউরিটি সলিউশন লি., উইমেন ইনভাইরনমেন্ট এন্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (উইডু), সাউয়াদ বিজনেস লাইন লি., মেসার্স গ্ল্যামার এন্টারপ্রাইজ, জেনিফার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, গাউছিয়া ট্রেডার্স সিকিরিটি ক্লিয়ারিং এন্ড লজিস্ট্রিক সার্ভিসেস এবং ডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি.।
এ বিষয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ওমেন ইনভাইরনমেন্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (উইডু) স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল আওয়াল হিমেলের সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, আমি প্রথমে অভিযোগ করেছি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর) ২০০৮ এর ধারা অনুসরণ করে ক্রয়কারী (PE) প্রতিষ্ঠান নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবরে। ডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি. নামক একটা অযোগ্য ফার্মকে নির্বাহী প্রকৌশলী জনবল নিয়োগের কাজ দিবে। আর্থিক বেনিফিটের জন্য একটা অযোগ্য প্রতিষ্ঠান, যে প্রতিষ্ঠান আউটসোর্সিংয়ের কোন কাজও করেনি, আউটসোর্সিং হিসট্রিতে ওই প্রতিষ্ঠান নেই ও আউটসোর্সিং অ্যাসোসিয়েশন আছে সেই অ্যাসোসিয়েশনের মেম্বারও না। এমনকি নির্বাহী প্রকৌশলী ডাক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লি. প্রতিষ্ঠানের কোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করেই কাজ দিচ্ছে। তাছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানকে আউটসোর্সিং দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে দেখি নাই। এরকম একটা অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার পরস্পরের যোগসাজশে এমনটা করছে।
তিনি (হিমেল) আরো বলেন, অভিযোগ আছে ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিাষ্ঠান জনবল নিয়োগ দেওয়ার জন্য অনেকের কাছ থেকে জনপ্রতি দুই-তিন লাখ করে টাকা নিয়েছে। ঠিকাদার মাঠ পর্যায় থেকে টাকা উঠাচ্ছে যার অর্ধেক পাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাকি অর্ধেক পাবে নির্বাহী প্রকৌশলী নিজে।
আমার প্রতিষ্ঠান উইডু, পিপিআরের নিয়ম অনুসরণ করে প্রসিডিউরের মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী যে অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে তার প্রতিবাদে করছে। প্রথমে ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের (PE) কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এখান থেকে প্রতিকার না পেলে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে চিফ ইঞ্জিনিয়ার, সচিব ও সিপিটিউ এর ডিজি বা প্যানেল চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করবো। আমরা প্রমাণাদি উপস্থাপন করে পূর্ণাঙ্গ রায় নেওয়ার চেষ্টা করবো। সন্তুষ্ট না পারলে আদালতের আশ্রয় নিবো। আশা করি আদালতের কাছ থেকে ভাল রেজাল্ট পাওয়ার এমন আশাবাদের কথা জানালেন ‘উইডু’র স্বত্বাধিকারী আব্দুল আওয়াল হিমেল।