কক্সবাজার প্রতিনিধি:
বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবিক সেবা কার্যক্রমে সমন্বয় জোরদার করতে কক্সবাজারে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (RRRC) কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক জনাব মোঃ দাউদ মিয়া, এনডিসি। তিনি এনজিও কার্যক্রমকে সরকারের নীতিমালা অনুসরণ করে পরিচালনা এবং সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সভায় অংশ নেন স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও প্রতিনিধিরা।
এ সময় বক্তব্য রাখেন হেলপ কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা রেসপন্সে বর্তমানে নানা প্রকল্প চলমান থাকলেও সবগুলো সমান গুরুত্বপূর্ণ নয়। ক্যাম্পে মাদক এখন একটি বড় হুমকি। রোহিঙ্গাদের বড় অংশ মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় হামলা, খুন, অপহরণসহ নানা অপরাধ ঘটছে। তাই মাদকবিরোধী প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়ন জরুরি।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য, খাদ্য, পানি-স্যানিটেশন, আশ্রয়ের পাশাপাশি মাদক প্রতিরোধ, মানব পাচার প্রতিরোধ এবং সামাজিক সম্প্রীতিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। অন্যথায় রোহিঙ্গা রেসপন্স পুরোপুরি ঝুঁকির মুখে পড়বে। এতে জরুরি সেবায় ঘাটতি, সহায়তায় সমন্বয়হীনতা, দাতা সংস্থার আস্থা হ্রাস এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে সামাজিক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে।
আবুল কাশেম জোর দিয়ে বলেন, কেবল বর্তমান দাতাদের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। নতুন দাতা রাষ্ট্র বা সংস্থাকে যুক্ত করতে হবে যারা দীর্ঘমেয়াদে সহযোগিতা করবে। এর মাধ্যমেই প্রকল্পগুলোর টেকসইতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এনজিওগুলো যদি নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ায় এবং প্রকল্প অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ করে, তবে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় উভয় জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে। একই সাথে সহায়তার অপচয় ও পুনরাবৃত্তি কমে আসবে।
সরকারের নীতিমালা মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এতে কার্যক্রমগুলো হবে আরও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য। হেল্প কক্সবাজার কেবল মাঠপর্যায়ে কাজই করছে না, বরং নীতি পর্যায়েও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে।
সভার সার্বিক আলোচনায় স্পষ্ট হয় যে, এনজিও, সরকার ও দাতা সংস্থা এই তিন পক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করলেই রোহিঙ্গা রেসপন্স আরও কার্যকর ও সুশৃঙ্খল হবে।