কক্সবাজার:
যৌন হয়রানি মামলার বাদিকে হুমকি দেওয়া সাধারণ অপরাধের তুলনায় অধিক গুরুতর হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ, এ ধরনের মামলায় ভুক্তভোগী আগে থেকেই মানসিকভাবে সংবেদনশীল অবস্থায় থাকেন, আর তাকে ভয় দেখিয়ে মামলা থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়।
কক্সবাজারের উখিয়ার জালিয়া পালং সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত জাফরের ছেলে আবছার মিয়া, মামলার বাদী মোহছেনা আক্তারকে প্রাণনাশ ও ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বাদী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আইনজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারা অনুযায়ী ভীতি প্রদর্শনের জন্য ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। তবে হুমকি যদি প্রাণনাশ, ধর্ষণ, অপহরণ বা গুরুতর আঘাতের হয়, তাহলে শাস্তি বাড়িয়ে ৭ বছর পর্যন্ত হতে পারে। পাশাপাশি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ অনুযায়ী যৌন হয়রানি মামলার বাদিকে হুমকি দেওয়া হলে তা অতিরিক্ত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর ফলে অভিযুক্তের জামিন বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া বাদিকে হুমকি দেওয়া আদালত অবমাননার সামিল। এতে মামলার বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়, যা আদালত আলাদাভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাদিকে সাথে সাথে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে, তদন্ত কর্মকর্তা ও আদালতকে লিখিতভাবে জানাতে হবে এবং প্রয়োজনে আদালতে আবেদন করে অভিযুক্তের জামিন বাতিল ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ চাইতে হবে। পাশাপাশি, মহিলা সহায়তা কেন্দ্র, মানবাধিকার কমিশন কিংবা সংশ্লিষ্ট এনজিওর সহযোগিতাও নেওয়া যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে হেলপ কক্সবাজার-এর নির্বাহী পরিচালক বলেন,
“যৌন হয়রানি মামলার বাদিকে হুমকি দেওয়া শুধু ভীতি প্রদর্শন নয়, এটি ন্যায়বিচার ব্যাহত করার অপচেষ্টা এবং ভুক্তভোগীর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।”