পিপলু মারমা, বান্দরবান:
কৌতুহল থেকে উদ্ভাবন এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে এক উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞান মেলা। দিনব্যাপী আয়োজিত এ বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করে বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, বান্দরবান সরকারী কলেজ, বান্দরবান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আল ফারুক ইনস্টিটিউট, রেইছা হাই স্কুল, মুরু আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় সহ মোট ৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞানের প্রায়োগিক জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানমনস্ক করে গরে তোলা ও তাদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ও উদ্ভাবনে চিন্তা শক্তি জাগ্রত করাই ছিল এই আয়োজন এর প্রদান লক্ষ্য। মেলায় ৬৯০ জন শিক্ষার্থী ১৩৯টি প্রজেক্ট পরিদর্শনে মাধ্যমে তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এছাড়া বান্দরবানের ৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী বৃন্দ তাদের নিজস্ব প্রজেক্ট নিয়ে এ মেলায় অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করেছে রোবটিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার, সোলার এনার্জি ভিত্তিক প্রকল্প, পরিবেশ বান্ধব যন্ত্র, কৃষি প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য সেবা, অপ্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থকে পরিবেশ বান্ধব উপায়ে রিসাইকেল করার পদ্ধতি। বাসা বাড়িতে বা শিল্প কারখানায় গ্যাস লিকেজ সনাক্ত করার পদ্ধতি, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ প্রভৃতি সহ নানা আকর্ষণীয় মডেল। বিশেষ করে প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি সহজবোধ্য বিজ্ঞান ভিত্তিক কাজ উপস্থিত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রাকিব ইবনে রেজওয়ান, এএফডব্লিউসি, পিএসসি কমান্ডার ৬৯ পদাতিক বিগ্রেড ও রিজিয়ন কমান্ডার, বান্দরবান রিজিয়ন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সভাপতি পত্নী, মিসেস মোশফেকা মোজাম্মেল সিঁথি। প্রধান অতিথি উদ্ভাবনী প্রজেক্ট গুলো পরিদর্শনের পর তার ভাষণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন অগ্রগামী করার লক্ষে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন এবং অভিনন্দন জানান। তিনি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও একাগ্রতার প্রশংসা করে বলেন, “আজকের এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীরাই আগামী দিনের প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশের চালিকা শক্তি হবে। তাদের মেধা ও গবেষণার মানসিকতা কে আরও এগিয়ে নিতে পরিবার ও শিক্ষকদের সম্মিলিত সহযোগিতা প্রয়োজন।”
প্রদর্শনীতে অভিভাবক, শিক্ষক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন। দর্শনার্থীরা শিক্ষার্থীদের নানা সৃজনশীল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে প্রদর্শনীর আয়োজনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠান শেষে বিচারকদের মূল্যায়ন এর ভিত্তিতে বিজয়ী প্রতিযোগীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠানের দক্ষ ল্যাপটেনের কর্নেল মোঃ শাহজাহান সিরাজ ভূঁইয়া,এমফিল এইসি তার বক্তব্যে আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান শিক্ষার উপযোগিতার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। মেলায় পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য তিনি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক সাধুবাদ এবং শিক্ষার্থীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন, এ আয়োজন ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়াবে এবং তাদের গবেষণাধর্মী চিন্তাভাবনাকে আরও গতিশীল করবে।