শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮ অপরাহ্ন
Headline :
2nd UN World Social Summit concluded with a commitment toward social protection. সারাদেশে নির্বাচনী হাওয়া বইছে, কেউ রুখতে পারবে না, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম সামাজিক সুরক্ষার প্রতি অঙ্গীকার Commitment toward Social Protection.  রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া- দুর্গাপুর) আসনে জামায়াতের বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নেত্রকোনায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের সাথে দর্পণ টিভির প্রতিনিধির সৌজন্য সাক্ষাৎ গাজীপুরে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বিনিময় শান্তিপূর্ণ পরমাণু প্রযুক্তি: দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত আইজিপির সঙ্গে আয়ারল্যান্ড এবং ইইউ প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা স.ম নুর উন নবীর জানাজা সম্পন্ন, জানাজায় শোকার্ত মানুষের ঢল

আলোকচিত্র: সময়ের ভেতর আলো ও ছায়ার গল্প


আজকের দুনিয়ায় মুহূর্ত হারিয়ে যায় চোখের পলকে। কিন্তু ফটোগ্রাফি সেই মুহূর্তকে ধরে রাখে চিরকালের জন্য। এটি শুধু একটি শিল্প নয়, এটি সময়কে সংরক্ষণের এক মোহময় মাধ্যম। আলোকচিত্র—যা একদিকে নান্দনিকতা, অন্যদিকে তথ্য বহন করে—হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ছবির পেছনের গল্প:
প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে এখন প্রায় সবার হাতেই রয়েছে একটি ক্যামেরাযুক্ত ফোন। ছবি তোলা সহজ হয়েছে, কিন্তু ভালো ছবি তোলা এখনও একটি সাধনার বিষয়। একজন প্রকৃত ফটোগ্রাফার জানেন, কখন আলো পড়ছে নিখুঁতভাবে, কোন মুহূর্তটি হৃদয় ছুঁয়ে যাবে, আর কোন কোণ থেকে ছবিটি বলবে এক নিঃশব্দ গল্প।
ফটোগ্রাফির বিবর্তন:
পিনহোল ক্যামেরা থেকে শুরু করে আজকের ডিএসএলআর ও মিররলেস প্রযুক্তি—ফটোগ্রাফি দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসেছে। আগের দিনে ছবি মানেই ছিল অপেক্ষা; এখন ছবি মানেই তাৎক্ষণিকতা। কিন্তু একটাই জিনিস অপরিবর্তিত — ছবি তোলার উদ্দেশ্য: একটি অনুভূতি, একটি গল্প, একটি সত্যকে প্রকাশ করা।
সাংবাদিকতা ও আলোকচিত্র:
খবরে সত্যতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে আলোকচিত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। একটি শক্তিশালী ছবি কখনো কখনো একটি হাজার শব্দের চেয়েও বেশি বলার ক্ষমতা রাখে। যুদ্ধক্ষেত্র হোক বা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, মানুষের আবেগ হোক বা জয়ের মুহূর্ত — ফটো জার্নালিজম আমাদের চোখের সামনে জীবনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে।
ফটোগ্রাফি ও তরুণ সমাজ:
বর্তমান তরুণ প্রজন্ম ফটোগ্রাফিকে শুধুমাত্র একটি শখ হিসেবে নয়, বরং পেশা হিসেবেও গ্রহণ করছে। সোশ্যাল মিডিয়া, ভিজ্যুয়াল ব্লগ এবং কনটেন্ট ক্রিয়েশনের যুগে ফটোগ্রাফি এখন একটি ভবিষ্যতনির্ভর পেশা। পাশাপাশি, অনেকেই ফটোগ্রাফির মাধ্যমে সামাজিক বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে, বদলে দিচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি।
ফটোগ্রাফি: শিল্পের সম্মান কোথায়?
আজকের যুগে ফটোগ্রাফি এতটাই সহজলভ্য হয়ে উঠেছে যে অনেকেই এই শিল্পের আসল মূল্যটি বুঝতে পারেন না। যেহেতু প্রায় সবার হাতেই এখন স্মার্টফোন আছে, অনেকে মনে করেন ছবি তোলা তো আর কোনো “বিশেষ” কাজ নয়। অথচ সত্য হলো, একটি ভালো ছবি তোলার পেছনে থাকে বছরের পর বছর অভ্যাস, শিল্পবোধ, এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজে এখনও অনেকেই ফটোগ্রাফিকে পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে মূল্যায়ন করে না। অনেক সময়েই দেখা যায়, ফটোগ্রাফারদের সঠিক পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না, তাদের কাজকে ‘শখ’ বলে অবহেলা করা হয়। অথচ একজন দক্ষ ফটোগ্রাফার একটি ছবির মাধ্যমে বদলে দিতে পারেন চিন্তা, ছড়িয়ে দিতে পারেন বার্তা, কিংবা তুলে ধরতে পারেন উপেক্ষিত বাস্তবতা। বিশেষ করে বিবাহ, অনুষ্ঠান কিংবা কর্পোরেট কাজে ফটোগ্রাফারদের ভূমিকা অপরিসীম হলেও, তাদের পরিশ্রমের যথাযথ মূল্য দেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও ঘাটতি রয়ে গেছে। এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে হলে প্রয়োজন সামগ্রিক মানসিকতার পরিবর্তন — ফটোগ্রাফিকে একটি প্রকৃত পেশা ও শিল্প হিসেবে সম্মান দেওয়া। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চর্চায় ফটোগ্রাফিকে গুরুত্ব দিলে কেবল ফটোগ্রাফাররাই উপকৃত হবেন না, সমাজও লাভবান হবে এক গভীর ও দৃষ্টিনন্দন চিত্রভাষা থেকে।
শেষ কথা:
ফটোগ্রাফি হলো জীবনের প্রতি এক গভীর মনোযোগের চর্চা। এটি আমাদের শেখায়—থামতে, দেখতে, অনুভব করতে। একটি ভালো ছবি শুধুই সুন্দর নয়, এটি আমাদের মনে প্রশ্ন তোলে, স্মৃতি জাগায়, কিংবা নিঃশব্দে বলে দেয় একটি সময়ের ইতিহাস। এই শিল্পকে কেবল প্রযুক্তির চোখে নয়, হৃদয়ের চোখে দেখলে তবেই ধরা পড়ে ফটোগ্রাফির সত্যিকারের সৌন্দর্য।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page